ফটোগ্রাফির শখ মনে হয় আমাদের সবারই কম বেশী আছে। কিন্তু শখ থাকলেই তো হবে না, সাথে সাধ্যও থাকতে হবে। ফটোগ্রাফি করতে হলে আর কিছু না হোক…. অন্তত একটা ক্যামেরার তো প্রয়োজন। কিন্তু আমার মত যাদের নিজের ক্যামেরা নেই তারা কি করবে ? চুপচাপ হাত গুটিয়ে বসে থাকবে ? না। হাত গুটিয়ে বসে থাকার কোন মানে হয় না। তাই বিকল্প হিসেবে বেছে নিলাম মোবাইল ফোনের ক্যামেরাকে।
মোবাইল ক্যামেরাতে আহামরি কোন ছবি ওঠে না সত্য। কিন্তু একেবারে যাচ্ছেতাই ওঠে তা কিন্তু নয়। অবশ্য এখানে ছবির কোয়ালিটি অনেকাংশে নির্ভর করে নিজের দক্ষতার উপর। তাই আপনি চাইলে আপনার ছবিকে অনেক ভাল একটা রূপ দিতে পারেন। কি করে ? খুব সহজ। ফটোশপ ব্যবহার করে সবই করা সম্ভব। অনেকেই হয়তো এরই মধ্যে ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন যে, এতো সফটওয়্যার থাকতে আমি ফটোশপের কথা কেন বলছি। দেখুন, প্রথম সমস্যা হল আমদের ছবি তোলার জন্য কোন কম্পেক্ট বা প্রোফেশনাল ক্যামেরা নেই। তাই ছবির গুণগত মান অতোটা যে ভাল হবে না এটা স্বাভাবিক।তাই বাধ্য হয়েই ফটোশপের মত শক্তিশালী সফটওয়্যারের সাহায্য আমাদের নিতে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে ফটোশপ ব্যবহার করতে হলেই যে, ফটোশপের উপর নিজেকে “বস” টাইপের কিছু হতে হবে এমন কোন কথা নেই। তবে এটা ঠিক ফটোশপের উপর আপনার দখল যত বেশি থাকবে আপনি এ ক্ষেত্রে তত বেশি সুবিধা পাবেন।
তবে আপাতত ফটোশপের কয়েকটা অপশনের উপর সাধারণ কিছু ধারণা থাকলেই ভালভাবে কাজ চালানো যাবে। তো আসুন, দেখা যাক আমরা কি কি অপশন নিয়ে কাজ করবো।
প্রথমেই বলি ইমেজ মুডের কথা। সাধারণত ক্যামেরাতে যে ছবি ওঠে তা সবই RGB মুডে থাকে। কিন্তু কাজের সুবিধার জন্য আমরা এখানে কাজ করবো CMYK ফরমেটে। আর এর জন্য আপনাকে যে কাজ করতে হবে তা হল, Image > Mood > CMYK সিলেক্ট করে দিতে হবে।
CMYK ফরম্যাটে কাজ করার বড় সুবিধা হল, কালার ম্যানেজমেন্ট করা অনেক সহজ হয়।তবে এখানে একটা কথা বলে রাখা ভাল যে, ছবি সম্পাদনার সব কাজ শেষ হলে পরে ছবিটিকে অবশ্যই পুনরায় RGB মুডে নিয়ে সেভ করবেন। নইলে যখন ছবিটি ফেসবুক বা অন্য কোন ওয়েব সাইটে আপলোড করবেন তখন এর ব্রাইটনেস এবং কালার রেঞ্জ বেড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
CMYK ফরম্যাটে কাজ করার বড় সুবিধা হল, কালার ম্যানেজমেন্ট করা অনেক সহজ হয়।তবে এখানে একটা কথা বলে রাখা ভাল যে, ছবি সম্পাদনার সব কাজ শেষ হলে পরে ছবিটিকে অবশ্যই পুনরায় RGB মুডে নিয়ে সেভ করবেন। নইলে যখন ছবিটি ফেসবুক বা অন্য কোন ওয়েব সাইটে আপলোড করবেন তখন এর ব্রাইটনেস এবং কালার রেঞ্জ বেড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
এরপরে যে অপশনটির কথা বলবো সেটা হল, ব্রাইটনেস/কনট্রাস্ট। এর মাধ্যমে আপনি ছবির ব্রাইটনেস ও কনট্রাস্ট ঠিক করে নিতে পারবেন।
এবার যে অপশনটি নিয়ে কথা বলছি সেটি হল কার্ভ। এই অপশনটি দ্বারা আপনি ছবির ব্রাইটনেস কনট্রোলের পাশাপাশি ছবিতে বিভিন্ন রঙের % ঠিক করতে পারবেন।কিবোর্ড থেকে Ctrl + M প্রেশ করলে এই অপশনটি চালু হবে। তা না হলে নিচের ছবির পদ্ধিতি অনুসরণ করুন।
ছবির কালার ম্যানেজমেন্ট আপনি কালার ব্যালেন্স নামক অপশন ব্যবহার করেও আপনি করতে পারবেন। এ জন্য আপনাকে Ctrl+B প্রেশ করতে হবে।
ব্যাস, ছবির ব্রাইটনেস ও কালার ম্যানেজনেন্টের কাজ আপাতত এখানেই শেষ। এবার ছবিকে একটু ভিন্ন লুক দেবার জন্য আরো কিছু অপশনের ব্যবহার দেখে নেই।
প্রথমেই বলি ক্রপ টুলটির কথা। এর মাধ্যমে আপনি ছবির অবাঞ্ছিত অংশ কেটে বাদ দিতে পারবেন। তবে এখানে একটা কথা বলে রাখি। ছবিকে যতই কাট ছাট করুন না কেন, সবসময় খেয়াল রাখবেন কাটার ফলে ছবিটি যেন বর্গাকৃতির হয়ে না যায়।
এরপরে বলি “ব্লার” টুলটির কথা। এর দ্বারা আপনি ছবির সাবজেক্টকে অক্ষত রেখে অবজেক্টকে ঘোলাটে করে দিতে পারবেন। এর ফলে আপনি ছবির সাবজেক্টকে অনেক সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন।
ফটোশপ টুলবারের “বার্ন” ও “ডোজ”(Dodge) টুল দুটি ব্যবহার করে ছবির কোন নির্দিষ্ট অংশের ব্রাইটনেস ও ডার্কনেস নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন।
ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে “ফিল্টার” অপশনের ব্যাপক ব্যবহার না করাই ভাল। এতে করে ছবির মৌলিকতা নষ্ট হবার সম্ভাবনা থাকে। তবে ফিল্টারের অন্তর্গত ব্লার অপশনটি ব্যবহার করতে পারেন। এখানে বিভিন্ন ধরনের ব্লার রয়েছে। আপনার ছবির সাথে যেটি খাপ খায় সেটিই ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
এরপরে বলি “ব্লার” টুলটির কথা। এর দ্বারা আপনি ছবির সাবজেক্টকে অক্ষত রেখে অবজেক্টকে ঘোলাটে করে দিতে পারবেন। এর ফলে আপনি ছবির সাবজেক্টকে অনেক সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন।
ফটোশপ টুলবারের “বার্ন” ও “ডোজ”(Dodge) টুল দুটি ব্যবহার করে ছবির কোন নির্দিষ্ট অংশের ব্রাইটনেস ও ডার্কনেস নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন।
ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে “ফিল্টার” অপশনের ব্যাপক ব্যবহার না করাই ভাল। এতে করে ছবির মৌলিকতা নষ্ট হবার সম্ভাবনা থাকে। তবে ফিল্টারের অন্তর্গত ব্লার অপশনটি ব্যবহার করতে পারেন। এখানে বিভিন্ন ধরনের ব্লার রয়েছে। আপনার ছবির সাথে যেটি খাপ খায় সেটিই ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
আপাতত এতোটুকু মনে থাকলেই ফটোশপ ব্যবহার করে আপনি আপনার ছবিকে সুন্দর একটা রূপ দিতে পারবেন।
এবার আপনারাই বলুন, ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে ফটোশপকে ব্যবহার করতে চাইলে খুব বেশি কি জানার প্রয়োজন হয় ? আমার তো মনে হয় না…..
তবে আপনি যদি ফটোশপ ব্যবহার করে সম্পূর্ণ মৌলিক কোন ডিজাইন করতে চান, সে ক্ষেত্রে কথা ভিন্ন। আমাদের আপাতত সেসবের দরকার নেই।
টিউনটির সাথে আমার মোবাইল ফোনে তোলা কিছু ছবি যোগ করে দিলাম। আপনারাই দেখে বলুন কেমন হয়েছে….
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন